Breaking

Tuesday, July 25, 2023

পেটের টানে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে ফের মৃত্যু পরিযায়ী শ্রমিকের !

নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদা :- পেটের টানে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে ফের মৃত্যু পরিযায়ী শ্রমিকের। কান্নায় ভেঙে পড়েছে বৃদ্ধ বাবা মা। ভিন রাজ্য থেকে দেহ নিয়ে আসার খরচ কিভাবে জোগাবে তাই ভেবে পাচ্ছে না পরিবার। সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন পরিবার- পরিজনদের। এলাকায় কর্মসংস্থান না থাকার কারণেই পেটের টানে বাইরে যেতে হচ্ছে এলাকার যুবকদের।অভিযোগ প্রতিবেশীদের। 

এই মৃত্যু নিয়েও তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এলাকায় কর্মসংস্থান করতে ব্যর্থ রাজ্য। ১০০ দিনের কাজের দেদার দুর্নীতি। যার কারণে মৃত্যু ঘটছে। এই দায় পুরোপুরি রাজ্যের। রাজ্য সরকার কর্মসংস্থান দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ অভিযোগ বিজেপির। ১০০ দিনের কাজ বন্ধ থাকার কারণে এলাকার ছেলেদের বাইরে যেতে হচ্ছে অভিযোগ তৃণমূলের। 

মালদা জেলার চাঁচল ১ নং ব্লকের কলিগ্রামের শহরবাগের বাসিন্দা রমজান খান (২২)। এলাকায় কাজ নেই। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা মা। সংসারের হাল ধরতে পারি দিয়েছিলেন ভিন রাজ্যে। দীর্ঘ দুই বছর ধরে তিনি ভিন রাজ্যে ফলসেলিং এর কাজ করতেন। পঞ্চায়েত ভোটের সময় ভোট ও দিতে এসেছিলেন বাড়িতে। ভোট দিয়ে ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতে যান ছত্রিশগড়ে। বাড়িতে বলে গেছিলাম এক মাস কাজ করে আবার মহরমে আসবেন। কিন্তু আর ফেরা হলো না রমজানের। 

রবিবার রাত ন'টায় বাড়িতে ফোন আসে ফল সিলিং এর কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হয়েছে রমজানের। এই খবর শোনার পর যেন আকাশ ভেঙে পড়ে রমজানের বাবা একলাকুল খানের মাথায়। একদিকে পুত্রশোক অন্যদিকে সংসারের চিন্তা। কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েছেন রমজানের বৃদ্ধ বাবা। রমজানের মা মারুফা বিবি কেঁদেই চলেছেন। শোকস্তব্ধ প্রতিবেশীরাও। 

সুদূর ছত্রিশগড় থেকে রমজানের মৃতদেহ কিভাবে বাড়িতে আনা হবে তা নিয়ে চিন্তিত রমজানের পরিবার। রমজানের চার দাদা থাকলেও তারা প্রত্যেকেই বিবাহিত। দিনমজুরের কাজ করে কোনক্রমে নিজেদের সংসার চালায়। তাই বৃদ্ধ বাবা-মায়ের দেখভালের দায়িত্ব ছিল রমজানের উপরেই। বাবা মা যাতে একটু ভালো থাকে। তাই তাদের মুখে হাসি ফোটাতেই ভিন রাজ্যে কাজ করতেন রমজান। 

রমজানের বাবা একলাকুল খান বলেন, "এখানে তো সেইভাবে কোনো কাজ নেই। ছেলেটা সংসার চালানোর জন্য তাই বাইরেই কাজ করতো।vভোট দিতে এসেছিল। ভোট দিয়ে আবার গেল। বলেছিল ঠিকাদার ডেকেছে ১০ দিনের কাজ আছে। আবার মহরমে আসব। কিন্তু ছেলেটা আমার চলে গেল।ওই আমাদের সব ছিল। সরকারের কাছে আবেদন যাতে দেহ আনার ব্যবস্থা হয়। আর কিছু যদি ক্ষতিপূরণ পাই।" 

আত্মীয় ইউসুফ আলী জানান, "আমার শ্বশুর বাড়ির অবস্থা খুব খারাপ। আমার শ্যালক বাইরে কাজ করে সংসার চালাতো। ওর মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না। সরকার একটু দেখুক পরিবারের দিকে এটাই এখন চাইব।" 

এলাকায় কোনো কর্মসংস্থান নেই যার কারণে ভিন রাজ্যে পারি, আর কাজ করতে গিয়ে ঘটছে মৃত্যু। গোটা ঘটনার সামনে আসতেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে একযোগে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। যদিও পাল্টা তৃণমূলের দাবি, ১০০ দিনের কাজ বন্ধ রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার, যার কারণে যুবকেরা কাজ না পেয়ে ভিন রাজ্যে পারি দিচ্ছে। পরিচয় শ্রমিকের মৃত্যুর দায় পুরোপুরি ভাবে কেন্দ্রের। 


No comments:

Post a Comment

Adbox