রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জী, আসানসোল : গত বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের ময়নাগুড়ির দোমহানিতে ঘটে যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। আর সেই ট্রেন দুর্ঘটনার পর থেকেই প্রথমে কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি আসানসোলের রেল কর্মচারী অজিত প্রসাদের। জানা গিয়েছে আসানসোলের রাধানগর রোডের বাসিন্দা পেশায় রেল কর্মচারী অজিত প্রসাদ রঙ্গিয়া ডিভিশনে কর্মরত ছিলেন। আর ওই ট্রেনেই ছিলেন তিনি বলে জানা গেছে।
এদিকে ট্রেন দুর্ঘটনার পর তার পরিবারের কাছে খবর আসার পরেই তারা রওনা দেন ময়নাগুড়ির উদ্যেশে। এদিকে তার সন্ধান না মেলায় গোটা রাধানগর এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া। যদিও তার পরিবারের বক্তব্য, গতকাল দুর্ঘটনা ঘটার পর তারা তার সন্ধান করেন। কিন্তু সেখান থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানান তারা। পাশাপাশি তার ব্যাবহার করা মোবাইল ফোনটি ও বন্ধ রয়েছে বলেন তারা। পাশাপাশি তার পরিবার আরও বলেন, এর আসল ঘটনা জানা যাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পরেই।
অবশেষে কাল সন্ধ্যার সময় জানা যায় সেই রেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অজিত প্রসাদ। কয়েক মাস আগেই বিয়ে করেছিলেন অজিত। তার মৃত্যুর খবর জানার পর শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার মানুষজনের মধ্যে। বিয়ের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই এই দুর্ঘটনায় শোকোস্তব্ধ প্রত্যেকেই। অজিতের স্ত্রী বর্তমানে গর্ভবতী। উত্তরবঙ্গের ময়নাগুড়িতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত আসানসোলের যুবক রেল কর্মী অজিত প্রসাদের নিঠর দেহ আজ পৌঁছায় আসানসোলের বাড়িতে। স্বজন হারার কান্নায় ভেঙে পড়লো রেলকর্মী অজিত প্রসাদের পরিবারের সদস্যরা।
এদিন তাদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান আসানসোল দক্ষিণের বিধায়িকা অগ্নিমিত্রা পাল। শান্তনার পাশাপাশি মর্মান্তিক ও দুঃখজনক ঘটনা বলে জানান বিধায়িকা। তিনি বলেন, আমি গতকাল রাতে খবরটি পাই এবং তখনই এখানে এসে পরিবারের সাথে দেখা করি। আজ এসেছি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে। আর অজিতের মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছে। শ্রদ্ধার্ঘ জানালাম। কিছু তো বলার ভাষা নেই, খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা। অজিতের স্ত্রী সাত মাসের গর্ভবতী বলে তিনি জানান। নিয়তির কাছে তো আমাদের কারোরই কিছু করার নেই। মাত্র ৩১ বছর সে সব ছেড়ে চলে গেলো। আমি অজিতের আত্মার শান্তি কামনা করি। ভারত সরকার এই পরিবারের পাশে আছে। আমি ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। রেল কর্তৃপক্ষ আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, অজিতের স্ত্রীকে চাকরি দেওয়া হবে। যেখানে অজিত চাকরি করতো যদি সেখানে করতে চায় তাহলে সেখানে চাকরি দেওয়া হবে। আর যদি আসানসোলে চাকরি চায় তাহলে তাকে এখানেই চাকরির ব্যাবস্থা করে দেওয়া হবে। মৃত ব্যাক্তির পরিবারকে যে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ভারত সরকার এবং আমি সবরকম ভাবে এই পরিবারের পাশে রয়েছি। কিন্তু কোনো কিছুর বিনিময়েই তো মানুষটিকে ফিরিয়ে আনা যাবে না। এই ক্ষতি এই পরিবারের কাছে একটা বিরাট শূন্যতা তৈরি করে গেলো।
No comments:
Post a Comment