নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া, আমার কলম :- ১৯৮২ সালে, গড়ে তোলা হয়েছিল গ্রামীণ হাওড়ার বাউড়িয়ার, "ফোর্ট গ্লস্টার মুক্ত মঞ্চ"। তখন এই মুক্ত মঞ্চের নাম ছিল "রোহিনী মুক্ত মঞ্চ"। পরবর্তীকালে এই "রোহিনী মুক্ত মঞ্চ"- এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় "ফোর্ট গ্লস্টার মুক্ত মঞ্চ"। এই মুক্ত মঞ্চটি গ্রামীণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া পৌরসভার অন্তর্গত ৫ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত।
২০২০ সালে আমফান ঝড় আছড়ে পড়ে বাংলায়। আর এই আমফান ঝড়ের দাপটে "ফোর্ট গ্লাসটার মুক্ত মঞ্চের" অবস্থা আরও করুন হয়ে পড়ে। এই মঞ্চের চারিদিকে অবস্থিত ব্রতী ক্লাব, তালতলা স্পোর্টিং ক্লাব, টাউন ক্লাব ও স্ফুলিঙ্গ সংঘ। এই চারটি ক্লাব এখানে তাদের বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান করে থাকে। চারটি ক্লাবের পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।
ব্রতী ক্লাব এই মুক্ত মঞ্চে দুর্গা উৎসব করে থাকে। টাউন ক্লাব বাসন্তী পূজা করে থাকে। স্ফুলিঙ্গ ক্লাব এবং তালতলা স্পোর্টিং ক্লাব বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে থাকে। বর্তমানে মাঠের মধ্যে এবং মাঠের চারিপাশে বিভিন্ন আবর্জনায় ভর্তি। ব্রতী ক্লাব ও তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় এখানে কিছু ক্যারাটের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই মুক্ত মঞ্চের মাথায় ছাউনি পর্যন্ত বর্তমানে নেই। মুক্ত মঞ্চের এই বেহাল অবস্থার জন্য রোদ-বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচেই তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হয়।
এই মুক্ত মঞ্চের চারপাশে রয়েছে বিভিন্ন কোয়াটার। এই কোয়াটারের পিছনে যে ড্রেনগুলি রয়েছে, সেগুলিও ভয়ংকর রূপ। সংস্কার করার প্রয়োজন রয়েছে। ড্রেন গুলি সংস্কার না হওয়ার জন্য আবর্জন এবং নোংরা স্তুপে ভরে গেছে। তার ফলে এখানে অস্বাস্থ্যকর একটা পরিবেশ গড়ে উঠেছে। সুলভ শৌচালয়ের নোংরা জল মাঠের মধ্যে ঢুকছে। কেউ কেউ মাঠটাকে দখল করে নিতে চাইছেন বলেও জানান ক্লাবের সদস্যরা। এমনকি ক্লাবের সদস্যদের দাবি, মাঠটিকে সংস্কারের কথা বললে তাদের হুমকির মধ্যেও পড়তে হচ্ছে।
টাউন ক্লাবের সম্পাদক শৈলেন কয়াল, ব্রতী ক্লাবের সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষ, স্ফুলিঙ্গ ক্লাবের সদস্য বিশ্বজিৎ মান্না ও কৃষ্ণা সাউ। সি.পি.ডি.আর. ইন্ডিয়ার রাজ্য কমিটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট তথা "তালতলা স্পোটিং ক্লাব"' এর সম্পাদক তপন কুমার ভট্টাচার্য একমত হয়ে এই ফোর্ট গ্লাস্টার মুক্ত মঞ্চের অবিলম্বে সংস্কারের দাবি জানাচ্ছেন। তালতলা স্পোটিং ক্লাব"' এর সম্পাদক তপন কুমার ভট্টাচার্য জানান, পূর্বের কাউন্সিলররা এটির সংস্কারের কিছুটা কাজ করেছিলেন।
চারটি ক্লাবের সমস্ত সদস্য সহমত পোষণ করে তপন ভট্টাচার্য বলেন, পূর্বের কাউন্সিলররা কিছুটা কাজ করার চেষ্টা করেছিলেন। এই মুক্তমঞ্চটি উলুবেড়িয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে অবস্থান করছে। বর্তমান পৌরমাতাকেও মুক্তমঞ্চের বিষয়টি জানিয়েছি, তার সাথে সাথে উলুবেড়িয়ার পৌরসভার চেয়ারম্যানকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। মুক্তমঞ্চের অবস্থা বেহাল অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে।
তপন ভট্টাচার্য আরও বলেন, আমরা চাই মুক্তমঞ্চটি রিপেয়ার করে পুনরায় পূর্ণাঙ্গরূপ দেওয়া হোক। তার সাথে সাথে এলাকার চারপাশে কোয়াটারের পিছনে যে ড্রেনগুলি অবস্থান করছে, সেগুলি ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। ড্রেন গুলি সংস্কার না হওয়ার জন্য আবর্জন এবং নোংরা স্তুপে ভরে গেছে। তার ফলে এখানে অস্বাস্থ্যকর একটা পরিবেশ গড়ে উঠেছে। সুলভ শৌচালয়ের নোংরা জল মাঠের মধ্যে ঢুকছে। কেউ কেউ মাঠটাকে দখল করে নিতে চাইছে। মাঠটিকে সংস্কারের কথা বললে হুমকির মধ্যেও পড়তে হচ্ছে ক্লাবের সদস্যদের। ক্লাবের সদস্যরা এমনটাই জানায়। মিল কর্তৃপক্ষ কিভাবে কাজ করতে চাইছে আমাদের জানা নেই। এলাকার উন্নয়ন নিশ্চয়ই হবে, এখানকার যারা বসবাস করেন তাদের দিকটাও দেখতে হবে। আগামীদিনে বর্তমান সরকারের কাছে, প্রশাসকের কাছে, এলাকার বিধায়ক, সাংসদ ও উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে ও দৃষ্টি আকর্ষণ করবো। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, তিনিও উন্নয়নের পক্ষে, কিন্তু উচ্ছেদের বিরুদ্ধে, তিনিও উচ্ছেদ চান না। ১৯৮০ সালে সার্কাস ময়দানকে যেভাবে ঘিরে উচ্ছেদ হয়েছিলো। তাই আমরা আতঙ্কিত। আগামী দিনে যদি মঞ্চের সংস্কার না হয় তাহলে চারটি ক্লাব শুধু নয়, আরো ক্লাব ও গোটা ফোর্ট গ্লস্টার বাসী বৃহত্তর আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে।


No comments:
Post a Comment