Breaking

Wednesday, August 18, 2021

লো - প্রেশার সম্পর্কে জানুন

 লো - প্রেশার সম্পর্কে জানুন 


প্রদীপ কুমার সাঁতরা  :- লো প্রেশার শব্দটার সাথে কম বেশী আমরা প্রত্যেকেই পরিচিত। আসুন জেনে নেওয়া যাক, লো প্রেশার কেন হয়? এর  লক্ষ্মণ গুলি কি কি? এবং কি কি করনীয়? 


রক্তচাপ কমে যাচ্ছে, লো প্রেশার, লো ব্লাড প্রেশার অথবা নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে এখন প্রত্যেকেই কম বেশি চিন্তিত থাকি। এ নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা হওয়ার কিছু নেই। অনেকেই মনে করে থাকেন দুর্বল স্বাস্থ্য যাঁদের, তাঁরা নিম্ন রক্তচাপে ভুগে থাকেন। এটা সম্পূর্ণ সত্য নয়। স্থূল মানুষের মধ্যেও নিম্ন রক্তচাপ বা লো প্রেশার থাকতে পারে।


সাধারণত সিস্টোলিক রক্তচাপ ৯০ মি. মি. মার্কারি ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মি. মি. মার্কারির নিচে থাকলে তাকে নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়। প্রেশার যদি খুব বেশি নেমে যায় তাহলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হৃৎপিণ্ডে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে না। ফলে অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। তাই প্রেশার লো হলে বাড়িতেই প্রাথমিক কিছু পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমাদের শরীরের জন্য উচ্চ রক্তচাপের মতো নিম্ন রক্তচাপ অর্থাৎ লো ব্লাড প্রেশারও ক্ষতিকর। অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে, দুশ্চিন্তা থেকে, ভয় ও স্নায়ুর দুর্বলতা থেকেও লো ব্লাড প্রেশার হতে পারে।


এবার দেখে নেওয়া যাক রক্তচাপের কারণ গুলি :- 


১) কোনো কারণে শরীরে জল শূন্যতা হওয়া।


২) ডায়রিয়া বা অত্যধিক বমি হলে।


৩) খাবার ঠিকমতো অথবা সময়মতো না খেলে।


৪)  হজমে দুর্বলতা দেখা দিলে।


৫) কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত থাকার কারণে।


৬) শরীরে হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা দেখা দিলে।


৭) রক্তশূন্যতা দেখা দিলে।


৮) এমনকি শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হলে অথবা দুর্ঘটনার কারণে রক্তপাত ঘটলে এবং অপুষ্টিজনিত কারণবশত লো ব্লাড প্রেশার দেখা দিতে পারে। গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে গর্ভের প্রথম ছয় মাস হরমোনের প্রভাবে লো প্রেশার হতে পারে।


নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণ কি কি আসুন দেখা যাক :- 


মাথা ঘোরা বা মাথা হালকা অনুভূত হওয়া, মাথা ঘুরে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বসা বা শোয়ার পর  হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে গেলে মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতা, চোখে অন্ধকার দেখা কিংবা সরষে ফুলের মতো দেখা বা চোখে ঝাপসা দেখা, শারীরিক দুর্বলতা এবং মানসিক অবসাদগ্রস্ততা, কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা, ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বা হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, খুব বেশি তৃষ্ণা অনুভূত হওয়া, অস্বাভাবিক দ্রুত হৃৎস্পন্দন, নাড়ি বা পালসের গতি বেড়ে গেলে বুঝতে হবে আপনি লো ব্লাড প্রেশারে আক্রান্ত হয়েছেন বা হতে চলেছেন।


লো নাকি হাই প্রেশার—কোনটি বেশি খারাপ আমাদের পক্ষে?


দুটোই খারাপ হতে পারে, তবে যখন প্রশ্ন করা হয় কোনটি বেশি খারাপ? নিঃসন্দেহে লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ বেশি খারাপ। কারণ, হঠাৎ প্রেশার কমে গেলে কিংবা কোনো কারণে প্রেশার কমে গেলে তাৎক্ষণিক শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন কিডনি, মস্তিষ্ক ইত্যাদি নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং তাৎক্ষণিক মৃত্যুও ঘটতে পারে। এ কারণে ডায়রিয়ায় জল শূন্যতা রোধ করার জন্য শিরায় স্যালাইন দেওয়া হয়। তবে উচ্চ রক্তচাপও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। তাই উচ্চ রক্তচাপও অতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।


চিকিৎসা হিসাবে কি করা যেতে পারে :- 


লো ব্লাড প্রেশার অথবা নিম্ন রক্তচাপের কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। নিম্ন রক্তচাপের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। যদি শরীরে জল শূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইট এর ভারসাম্যহীনতার কারণে নিম্ন রক্তচাপ হয়, তাহলে শুধু খাবার স্যালাইন মুখে খেলেই লো প্রেশার ঠিক হয়ে যায়। তবে যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি নিম্ন রক্তচাপ আছে, তাঁদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


নিম্ন রক্তচাপ কি কি নিয়ন্ত্রণে করণীয় :- 


১) নিম্ন রক্তচাপের ভুক্তভোগীরা অনেকক্ষণ একই স্থানে বসে বা শুয়ে না থাকাই ভালো।


২) অনেকক্ষণ ধরে বসে বা শুয়ে থাকার পর ওঠার সময় সাবধানে বা ধীরে ধীরে উঠুন।


৩) ঘন ঘন হালকা খাবার খান। বেশি সময় খালি পেটে থাকলে রক্তচাপ আরও কমে যেতে পারে।


৪) পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ জল পান করুন।


৫) খাবার সময় পাতে এক চিমটি করে লবণ খাওয়া যেতে পারে।


৬) দৈনন্দিন খাবারের তালিকার মধ্যে গ্লুকোজ ও স্যালাইন রাখতে পারেন।

No comments:

Post a Comment

Adbox