মালদা :- বছরের অন্য সময় ক্যানেলে তেমন জল না থাকায় ক্যানেলের উপর অস্থায়ী মাটির রাস্তা তৈরি করে সেখান দিয়েই যাতায়াত করে এলাকাবাসী। কিন্তু বর্ষাকালে ক্যানেল জলে পরিপূর্ণ হতেই এলাকা জুড়ে বন্যা পরিস্থিতি। সেতু না থাকায় কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকা। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করা অস্থায়ী একটি বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে জলে পড়ে গিয়ে ঘটছে বিপদ।
এদিকে গ্রামে অ্যাম্বুলেন্স না ঢুকতে পারার জন্য বিপাকে পড়ছে প্রসূতি থেকে শুরু করে রোগীরা। ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন প্রায় হাজার হাজার মানুষ। প্রশাসন এবং জন-প্রতিনিধিদের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে।
সেতুর দাবিতে বিক্ষোভ স্থানীয়দের। ওই পঞ্চায়েত বিরোধীদের দখলে থাকায় প্রশাসন বিমাতৃ সুলভ আচরণ করছে অভিযোগ বিজেপির।পাল্টা সাফাই তৃণমূলের।
মঙ্গলবার মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ছোটপারো গ্রামের ঘটনা। ছোট পারো থেকে ভাগ বড়োল পর্যন্ত রয়েছে একটি ক্যানেল। ওই গ্রাম সহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষকে যাতায়াত করতে গেলে ক্যানেলের উপর দিয়েই যেতে হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে সেতুর দাবি থাকলেও সেই দাবি পূরণ হয়নি। বিধায়ক থেকে সাংসদ প্রত্যেকেই ভোট প্রচারে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু প্রতিশ্রুতিই সার।
এদিকে বর্ষা শুরু হতেই কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে গ্রামগুলি।বছরের অন্য সময় ক্যানেলে জল কম থাকার ফলে অস্থায়ী মাটির রাস্তা তৈরি করে যাতায়াত করে মানুষজন। তবে বর্তমানে ওই ক্যানেল ফুলে ফেঁপে উঠেছে। নেই কোন কালভার্ট। যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। স্থানীয় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে একটি অস্থায়ী বাঁশের সেতু তৈরি করা হয়েছে। যদিও সেই সেতুতে রয়েছে একটিমাত্র বাঁশ। যেখান দিয়ে বিপদজনক ভাবে পায়ে হেঁটে চলাচল করছে মানুষজন।অনেকেই ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাচ্ছে ক্যানেলে।
ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল যাওয়া কার্যত শিকেই উঠে গেছে। দুইদিন আগেই এক কিশোরী বাঁশের সাঁকো দিয়ে যেতে গিয়ে ক্যানেলে পড়ে যায়। স্থানীয়দের তৎপরতায় রক্ষা পায় তার প্রাণ। এদিকে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে গ্রামে ঢুকতে পারছে না কোন গাড়ি। ঢুকতে পারছে না অ্যাম্বুলেন্স। প্রসূতিদের নিয়ে যেতে পারছে না হাসপাতালে। গ্রামেই হচ্ছে প্রসব। সমস্যায় পড়ছেন অন্যান্য রোগীরাও। তাই এদিন সেতুর দাবিতে তুমুল বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। তাদের দাবি দ্রুত সেতু নির্মাণের কাজ শুরু না হলে আন্দোলন আরো বৃহত্তর হবে।
অন্যদিকে সিপিএমের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের অভিযোগ তিনি একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু কেউ কোন কাজ করেননি। তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এই মুহূর্তে রয়েছে বিজেপি কংগ্রেস সিপিএম জোটের দখলে। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূলের ভোট না থাকার কারণে তৃণমূল এই এলাকায় কোন উন্নয়নমূলক কাজ করছে না।
যদিও রাজ্যের মন্ত্রী তথা হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভার বিধায়ক তাজমুল হোসেনের দাবি বিক্ষোভের কথা আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি কি ব্যাপার আছে। যদিও রাজনীতির এই তরজায় কবে সমস্যার সমাধান হবে ছোট পারোর লোকেদের। সেই দিকেই তাকিয়ে এলাকাবাসী।
No comments:
Post a Comment