নিজস্ব প্রতিনিধি, আমার কলম :- ঘটনা ২০০০ সালে নানুরের সুচপুর গ্রাম গণহত্যায় উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। ঘটনা ২০০০ সালে ২৭শে জুলাই বৃহস্পতিবার জমি বিভাগকে কেন্দ্র করে তৎকালীন শাসক দল সিপিআইএম ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে ১১ জন তৃণমূলের কর্মীকে নৃশংস ভাবে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল সিপিআইএমের বিরুদ্ধে।
ওই ১১ জন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী বলে দাবি করেছিলেন মৃতের পরিবার গুলি। মাঠের মধ্যেই পড়েছিল ১১ জনের মৃতদেহ। মৃত দের নাম শেখ নিজাম, রসুল বক্স, সবুর শেখ, শেখ সালামত, হারাই শেখ, সরান মেটে, শফিকুল শেখ, শেখ সফিক, আশরাফ আলী, শেখ রাজা, শেখ আলী হোসেন এদের সবারই মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় এই অঞ্চলের তৎকালীন সাংসদ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় নিহতদের ভাড়াটে গুন্ডা, ডাকাত ও কুখ্যাত সমাজবিরোধী হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। মৃত্যুর খবর শুনে মৃতের পরিবার গুলি ভেঙ্গে পড়ে। গণহত্যার অভিযোগে তৎকালীন সিপিআইএম এর ৬৭ জনের নামে মামলা হয়। তার মধ্যে ২৩ জন বেকসুর খালাস পাই।
তারপর দীর্ঘ ১০ বছর মামলা চলার পর দায়রা আদালত ২০১০ সালে হত্যাকাণ্ড মামলার রায় দেয়, যেখানে ৪৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ৪৪ জনের মধ্যে ৪ জন সিপিআইএম সদস্য এবং ৪০ জন সিপিআই(এম) সমর্থক ছিল। ৪৪ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজনেরই মৃত্যু হয়েছে। ২৭ শে জুলাই এই দিনটিকে বীরভূম তৃণমূল কংগ্রেস শহীদ দিবস পালন করে।
ঘটনার পর নানুরের বাসাপাড়ায় ১১ জনের নামে শহীদ বেদী তৈরি করা হয়। ২৭ শে জুলাই শহীদ বেদীতে মাল্যদান করতে আসতেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার পর ২০০১ সাল থেকে প্রতি বছরই নানুরের বাসাপাড়ায় ২৭ জুলাই দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে পালিত করা হয়।
হিন্দু মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের তৃণমূলের কর্মী শহীদ হয়েছিলেন তাই এদিন শহীদ বেদীর সামনে শহীদদের নামে ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা হয়। ২০০৫ সালের ১২ মে নানুর হত্যাকাণ্ডের প্রধান সাক্ষী আব্দুল খালেক ও তাঁর দেহরক্ষী দুষ্কৃতীদের আক্রমণে আহত হন। অভিযোগ উঠেছিল সিপিআইএমের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।
প্রতি বছরের মত এবছরও নানুরের বাসাপাড়ায় শহীদ দিবস পালন করা হয়। এদিন শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে সাজিয়ে তোলে তৃণমূল নেতৃত্বরা। শহীদদের স্মরণ করতে নানুরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ৬ হাজার তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা জমায়েত করে বাসাপাড়ায়। উপস্থিত ছিলেন, বীরভূম জেলার সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী, রাজ্যের মন্ত্রী বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা, বীরভূম জেলার মেন্টর অভিজিৎ সিনহা, বীরভূম জেলার পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খান সহ অন্যান্য তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকর্মীরা।
বীরভূম জেলার কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খান বলেন, আজকের দিনটাকে সারা ভারতবর্ষের মানুষ জানে ২০০০ সালে ২৭ শে জুলাই নানুরের সুচপুর এর মাঠে ১১ জন তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক সিপিআইএম এর দুষ্কৃতীদের হাতে মৃত্যু হয়েছিল। ২০০০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আমরা ২৭ জুলাই দিনটাকে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করি। সেই শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করি আমরা।


No comments:
Post a Comment