রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জী, আসানসোল : রাজ্যের চার পৌর নিগমের ভোট অনুষ্ঠিত হলো আজ শনিবার। আর এদিন ভোট শুরু থেকেই রাজ্যের চার পৌর নিগম এলাকা থেকে আসতে থাকে একাধিক অভিযোগ।
এদিন সকাল থেকেই আসানসোল পৌর নিগমের বিভিন্ন স্থান থেকে আসতে থাকে একের পর এক অভিযোগ। কখনো শাসক দলের বিরুদ্ধে বুথ দখলের অভিযোগ করে বিরোধীরা। কোথাও আবার বিজেপি প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। আর সেই খবর সংগ্রহ করতে গেলে আক্রান্ত হতে হয় সংবাদমাধ্যমের কর্মীদেরও।
আবার আসানসোলের ধারকা এলাকায় শূন্যে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এদিকে গুলি চালানোর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় এসে পৌছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী।
অন্যদিকে জামুড়িয়া এলাকায় বহু বুথ থেকেই মারধর করে বের করে দেবার অভিযোগ ওঠে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে আসানসোল উত্তর, দক্ষিণ, কুলটি, রানীগঞ্জ, জামুড়িয়ার বহু বুথ দখলের অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। এমনি জানাচ্ছে আমাদের প্রতিনিধি।
বিজেপির জেলা সভাপতি বলেন তৃণমূল বহিরাগত গুন্ডাদের নিয়ে বীরভূম থেকে নিয়ে এসে বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোট দিয়েছে ও বাধা দিলে বিজেপি প্রার্থী ও কর্মীদের মারধর করেছে মোবাইল বাইকের চাবি কেড়ে নিয়েছে কোথাও আবার ইভিএম মেশিন ভাঙার খবর আছে পরে সেই স্থানে নতুন মেশিন এসে পুনরায় ভোটগ্রহণ করা হয়। সিপিএমের ছাত্র ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন আমরা বারবার অবজারভার কে বলেছি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে কিছু দুষ্কৃতী তাদের ভোট দিতে মানুষের ভোট মানুষ তাদের ভোট দিতে পারছে না বুথ থেকে বের করে দিচ্ছে বুথের সামনে যেতে দিচ্ছে না ভোট লুট হচ্ছে তাই আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছি পুনরায় কিছু কেন্দ্রে ভোট করা হয় যেনো।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার কংগ্রেস নেতা কংগ্রেস সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন আমরা ৬২ টা বুথে পুনরায় নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছি তিনি বলেন কংগ্রেস কর্মীদের এজেন্টের বুথের সামনে মারধর করেছে তৃণমূল। জাতীয় কংগ্রেস কর্মীদের তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা মারধর করেছে ভোট দিতে দেয়নি ভোট জ্যাম করে ছাপ্পা ভোট দিয়েছে আই আমরা পুনরায় ভোট চাইছি।
এই বিষয়েই এদিন আই জি পশ্চিমাঞ্চল সঞ্জয় সিং বলেন, এখনো পর্যন্ত ছয়জনকে অ্যারেস্ট করেছি চার জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছে সকাল থেকেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলোতে ভোট দাতাদের লম্বা লাইন চোখে পড়ে। সকাল সকাল রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক চেলিডাঙ্গা তে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট দেন। ভোট গ্রহণ কেন্দ্র গুলিতে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল জোরদার।
এপ্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান এর বিজেপি সভাপতি দিলীপ দে জানান, শাসক দল বলেছে এই ভোট হলো শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। কিন্তু এই নির্বাচন হলো শ্মশানের শান্তি। ৭০ টি বুথে, ৭০ টি ওয়ার্ডে পুলিশ প্রশাসনের নেতৃত্বে তৃণমূলের বহিরাগতরা এই পোলিং করেছে। সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী আমরা নির্বাচন কমিশন কে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু আমরা রি - পোলিং এর জন্য আবেদন করিনি। কারণ রি - পোলিং করলে আবার সেই একই ঘটনা ঘটবে। এই নির্বাচনে বহু বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণ করা হলো, মারা হলো, মহিলা কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হলো। আমরা যেখানে প্রতিরোধ করেছি, সেখানে ভালো ফল আশা করছি। জনগন ওদের ছি ছি করছে। এর ফল জনগন লোকসভা নির্বাচনে জানিয়ে দেবে।
এপ্রসঙ্গে তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাশু বলেন, এর আগে কি কোনো নির্বাচনে সমস্যা, ঝামেলা ঝঞ্ঝাট হয়নি। ছোটো খাটো অপ্রীতিকর ঘটনা সব নির্বাচনেই হয়ে থাকে। সিপিআইএম এর ৩৪ বছর রাজত্বকালে কি কোনো ঝামেলা ঝঞ্ঝাট হয়নি। আজ শুধু তৃণমূল ক্ষমতায় আছে বলেই সমস্যা হচ্ছে। একটা নির্বাচনে এরকম ছোটো খাটো ঘটনা তো হবেই। কারণ এখানে সবাই জেতার জন্য এসেছে।
তিনি আরো জানান, কেউ যদি নির্বাচনের বুথে সেন্ট্রাল ফোর্স নিয়ে ঢুকতে যায়, তাহলে নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তো বাধা দেবেই। আপনি একা ঘুরুন না, কেউ বাধা দেবে না।
No comments:
Post a Comment